December 26, 2024, 7:48 pm

কোষ্ঠকাঠিন্যের সহজ সমাধান দিলেন ডা. তাসনিম জারা

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Monday, September 14, 2020,
  • 125 Time View

পেট পরিষ্কার হচ্ছে না। পায়খানা করতে কষ্ট হয়। টয়লেটে অনেক সময় ধরে বসে থাকতে হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন। এমন সমস্যার সমাধান তুলে ধরেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. তাসনিম জারা। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এভিডেন্স বেজড মেডিসিন’ নিয়ে পড়ছেন।

যেসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যে হয়:

১. খাদ্যে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ না থাকা

পেট পরিষ্কার করার জন্য খাবারে আঁশ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পেটের ভেতর যেখানে মল তৈরি হয় সেখানে আশঁ স্পঞ্জের মতো কাজ করে। অর্থাৎ পানি শোষণ ও ধারণ করার মাধ্যমে মলে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে মল নরম ও ভারী এবং তা সহজেই বেরিয়ে আসে। শুধু তাই নয়, স্বাভাবিক মল তৈরিতে আঁশ আরও অনেকভাবে সাহায্য করে।

সমাধান: যেসব খাবারে ফাইবার বা আঁশ বেশি সেগুলো খেতে হবে। যেসব খাবারে আঁশ বেশি সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ডাল, ছোলা, গাজর, শসা, টমেটো, আপেল, কলাসহ প্রায় সব শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য গোটা শস্য দানা ইত্যাদি। গোটা শস্য দানা হচ্ছে লাল চাল, লাল আটা ইত্যাদি।

খাদ্যাভ্যাসে কী কী পরিবর্তন আনলে খাবারে আঁশের পরিমাণ বাড়বে? এর সহজ উপায়গুলো হল:-

১. রুটি বা ভাতের সঙ্গে ডাল খাওয়া।

২. প্রতি বেলায় সবজি খাওয়া।

৩. শসা-গাজর-টমেটোর সালাদ খাওয়া।

৪.নাস্তার সঙ্গে যেকোনও একটা ফল যেমন: কলা, আপেল, নাশপাতি বা বাদাম খাওয়া।

৫. যেসব ফল ও শাক-সবজি খোসা-সহ খাওয়া যায় সেগুলো খোসা-সহই খেতে হবে। তবে তার আগে অবশ্যই সেগুলো ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।

৬. যতটা সম্ভব ফল বা সবজি আস্ত রেখে খাওয়া। ব্লেন্ড বা জুস কিংবা ভর্তা বানালে আঁশ কমে যায়।

তবে এক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে সাবধান হতে হবে। হঠাৎ করে খাবারে আঁশের পরিমাণ বেশি বাড়ানো হলে পেট ভাপা দেখা দিতে পারে। তাই ধীরে ধীরে খাবারে আঁশের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

২. যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান না করা

মল নরম হতে হলে শরীরে পানির প্রয়োজন হয়। যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান না করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সমাধান: দিনে অন্তত ২ লিটার পানি পান করা।

 

৩. দীর্ঘ সময় ধরে শুয়ে-বসে থাকা

হাঁটা-চলা কমিয়ে দিলে, শারীরিক পরিশ্রম কম হলে এবং অনেকক্ষণ সময় ধরে শুয়ে-বসে থাকলে এবং ব্যায়াম না করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। শারীরিক পরিশ্রম ও শরীর চর্চা বৃহদন্ত্র সচল হয় এবং স্বাভাবিক মল ত্যাগে সাহায্য করে।

সমাধান: ঘরে বেশি সময় ধরে শুয়ে-বসে না থাকা। শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করা।

৪. পায়খানা চেপে রাখা

পায়খানা না করে আটকে রাখলে দিন দিন শরীর সেটা থেকে পানি শুষে নেয়। ফলে মল খুবই শুকে যায় এবং তা বের হওয়া কষ্ঠকর হয়ে দাঁড়ায়।

সমাধান: পায়খানার চাপ আসলে বেশি দেরি না করা। যত দ্রুত সম্ভব তা সেরে ফেলা।

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ আছে তাদের জন্য সবচেয়ে ভাল হয়ে উঁচু কমোড ব্যবহার না করে। বরং নিচু প্যান ব্যবহার করা ভাল।

৫. মানসিক চাপ, উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্নতা

অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্নতার কারণে মানসিক চাপ দেখা দিতে পারে।

সমাধান: মানসিক প্রশান্তি আনে কিছু কাজ করার চেষ্টা করুন। সেটা হতে পারে আপনজনের সঙ্গে সময় কাটানো।

আর যদি আপনি মানসিক রোগে ভুগে থাকেন তাহলে চিকিৎসা নিতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হবে।

৬. কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের পার্শ্বপতিক্রিয়া হিসেবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এক সঙ্গে পাঁচটির বেশি ওষুধ খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা বাড়ে।

সমাধান: নতুন ওষুধ খাওয়া শুরু করার পর যদি মনে হয় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। হয়তো তিনি ওষুধ পরিবর্তন করে দিতে পারেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71